ছাত্র আন্দোলনে হত্যার প্রতিবাদ ও নির্বিচারে শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের সামনে হয়ে গেল বিভিন্ন মহলের শিল্পীদের শান্তি সমাবেশ। ‘গণহত্যা ও নিপীড়নবিরোধী শিল্পী সমাজ’-এর ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে লিখিত বক্তব্যে শিল্পী সমাজের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় অবিচার, অনাচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো কর্তব্য বলে উল্লেখ করা হয়। ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ’র মতো শিল্পীদের এই সমাবেশেও ছিলেন নাট্যজন মামুনুর রশীদ।
পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে মামুনুর রশীদ সাম্প্রতিক অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়গুলো নিয়েও কথা বলেন। শিল্পীদের সামনে অনিশ্চয়তা আছে কিনা জানতে চাইলে প্রবীণ এই নাট্য নির্দেশক, অভিনেতা বলেন, শিল্পীদের সামনে, আমার সামনে যে অনিশ্চয়তা, এতোগুলো প্রাণ ঝরে গেল। বিশেষ করে শিশু দুটির জন্য আমি রীতিমতো রাতে ঘুমাতে পারি না। এটা আমার বাস্তব ব্যক্তিগত অবস্থান। কিন্তু এর বাইরেও যেটা ঘটছে, এটাকে একটা কোটা সংস্কার আন্দোলন বলা যাবে না। এটা মূলত মানুষের অনেক দিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি বলেন, মানুষের বঞ্ছনা হচ্ছে, নানান ধরনের দুর্নীতি হচ্ছে- এর বিরুদ্ধেই আসলে এই প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদে যে এত প্রাণ ঝরবে, এটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি।
এই নাট্য ব্যক্তিত্ব আরো বলেন, এখনো ধরপাকর, নানান ধরনের হয়রানি করা হচ্ছে; আমি মনে করি এসব অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এটা রাজনৈতিকভাবে সমাধান হওয়া উচিত।
তরুণদের কথা শোনা ছাড়া এই মুহূর্তে কোনো সমাধান নেই বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে মামুনুর রশীদ বলেন, পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। এই ক্ষোভ নিরসন হবে না। মানুষের কথা শুনতে হবে। সংলাপ তৈরী করতে হবে। তরুণরা কী বলতে চাইছে সেটা শুনতে হবে। ব্যাখ্যা করতে হবে এবং তার মধ্য দিয়েই আমি মনে করি এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
সমস্যা সমাধানের পথ তৈরীর আহ্বান জানিয়ে মামুনুর রশীদ বলেন, যারা আন্দোলনে আছে তারা কেউ রাজনৈতিক পরিচয়ে নামেনি। আমি গতকাল ফার্মগেটে দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীদের সঙ্গেও গিয়েছি, আমি তো দেখেছি এখানে কেউ পলিটিক্যাল নয়। রাজনৈতিক পরিচয় কারোরই নাই। তাহলে রাজনৈতিক এমন ট্যাগ দেওয়ার বিষয়গুলো কেন আসছে? আমার মনে হয়, কারো রাজনৈতিক পরিচয় এই মুহূর্তে খোঁজে বের করার দরকার নাই। সমস্যার সমাধান করার জন্য সবারই চেষ্টা করা উচিত।