যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ: আইজিপি

যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত পুলিশ: আইজিপি

‘দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং সারা দেশে এক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছিল। প্রধানমন্ত্রী এই পুরো বিষয়টিকে জিরো টলারেন্স হিসেবে গ্রহণ করার কারণে আমরা দেশবাসী দায়িত্বপালন করে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শপথ বাণী নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা, প্রশাসন, দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষ, আমাদের সাংবাদিক বন্ধুগণ, জনপ্রতিনিধি সবার সহযোগিতায় আমরা একসঙ্গে দায়িত্বপালন করে বাংলাদেশের এই জঙ্গি-সন্ত্রাসীবাদকে নিয়ন্ত্রণে আসতে সক্ষম হয়েছি।আমরা মনে করি, আজকে বাংলাদেশ পুলিশ আইন-শৃঙ্খলার রক্ষার যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। ’

শনিবার (১৮ মে) মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে সদ্য নির্মিত ‘টেরাকোটায় মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক চিত্রকলার ক্যানভাসটি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ কথা বলেন।

পুলিশপ্রধান বলেন, আপনারা দেখেছেন, ঈদ হোক, পূজা হোক যখন সাধারণ মানুষেরা দেশের সম্মানিত নাগরিকরা, যার যার গন্তব্যে যান তখন তাদের রাস্তার নিরাপত্তা বাংলাদেশ পুলিশ সাহসিকতার সাথে প্রদান করছে এবং যেখানে যাচ্ছেন সেখানেও তাদের নিরাপত্তা প্রদান করে বাংলাদেশ পুলিশ সদস্যরা নিজের ছুটিকে বিসর্জন দিয়ে আগ্রহভরে দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের পরিবার এবং তাদের সন্তানরাও এতে গর্বিত হন এই ভেবে যে, তারা তাদের নিজেদের ছুটি বাদ দিয়ে মানুষের নিরাপত্তা দান করার মতো মহৎ একটি কাজে তারা নিযুক্ত আছেন। গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের পুলিশ সদস্যদের এই মহৎ দায়িত্বটি নিজ নিজ গণমাধ্যমে প্রচার করার ফলে আমাদের পুলিশ সদস্যরা উৎসাহিত হন, অনুপ্রাণিত হন। এজন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। ’

এ বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার (এসপি) মনজুর রহমান। এ সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার শাহ মিজান শফিউর রহমান, পুলিশ কমিশনার জাকির হোসেন খান, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. উর্মি বিনতে সালাম।

এতে বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ তুলে ধরা হয়। মৌলভীবাজারের চা বাগান ও পর্যটন আকর্ষণ উঠে আসে এই শিল্পকর্মে। নির্মিত টেরাকোটার কোনোটা বড় আকারের মুখোশ, কোনোটা নারীর গড়ন। মাঝখানে বড় পরিসরে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তেজোদীপ্ত তর্জনী। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও পাঁচ ফুট প্রস্থের এ শিল্পকর্মে রয়েছে বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকা যোদ্ধারা। এক প্রান্তে ৮ ডিসেম্বর ৭১-এর শীতের সকালে একটি নতুন উদীয়মান সূর্যের উন্মোচন। আন্দোলন এবং স্বাধীনতার জন্য নয় মাসের লড়াইয়ে মৌলভীবাজার হানাদারমুক্ত দিবসে বিজয় উল্লাসের স্মৃতিপট। বাংলাদেশ সরকার ঐত্যিহ্যবাহী এই শিল্পকর্মের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে দেশে পোড়ামাটির শিল্প বিকাশে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।  

পোড়ামাটির শিল্প মানব সভ্যতার জন্মলগ্নের চিহ্ন বয়ে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্যেও টেরাকোটা ছিল। পোড়ামাটির শিল্পসামগ্রী দিয়েই প্রাচীন সভ্যতার কাল নির্ণয় করা হয়ে থাকে। টেরাকোটা একটি লাতিন শব্দ। টেরা অর্থ মাটি আর কোটা অর্থ পোড়ানো। অর্থাৎ ‘টেরাকোটা’ শব্দটির অর্থ হলো ‘পোড়ামাটি’। তাই টেরাকোটা শিল্প বলতে বোঝায় “পোড়ামাটির শিল্পকর্ম”।

পাহাড়পুরের  মতো লোকশিল্পের ফলক আবিষ্কৃত হয়েছে আসামে এবং বাংলাদেশের ময়নামতি ও সাভারে। একই সময়ে বিষ্ণপুরের নিকট বহুলাড়া গ্রামে প্রায় ৬৩ ফুট উঁচু ইট নির্মিত বিখ্যাত ‘সিদ্ধেশ্বর শিবমন্দির’ গাত্রে টেরাকোটা শিল্প ভাস্কর্যের অপূর্ব সমাবেশ দেখা যায়। সমসাময়িককালে প্রতিষ্ঠিত, বাঁকুড়ার বালিয়াড়া গ্রামের জরাজীর্ণ মন্দিরটিও টেরাকোটা শিল্পের বৈভব সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS