আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তবে সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় সচিবালয়সহ সরকারি-বেসরকারি অফিস, মসজিদ ও বাসাবাড়িতে এসির (শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র) তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিন দিনের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে উপদেষ্টা এ অনুরোধ জানান।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা ডিসিদের আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি। আমরা অন্তর্বর্তী সরকার খাদের কিনারে অর্থনীতি পেয়েছি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২১ সালে ছিল ৪২ মিলিয়ন ডলার, সেটা এখন কমে ২০ বিলিয়ন ডলারে চলে এসেছে। অর্থপাচার হয়ে গেছে। এর কারণে আমাদের জ্বালানি-বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করতে সমস্যা হয়েছে, সেটার কথা বলেছি।
তিনি বলেন, আসন্ন রমজান এবং গ্রীষ্মকালে বিদ্যুৎ সরবরাহের আয়োজন সম্পন্ন করেছি। আমরা আশা করি রমজান মাসে এবং তারপর গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবো।
উপদেষ্টা বলেন, আমি জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ জানিয়েছি, শীত মৌসুমে আমাদের বিদ্যুতের চাহিদা নয় হাজার মেগাওয়াট। গ্রীষ্মকালে এটা বেড়ে ১৭-১৮ হাজার মেগাওয়াট হয়ে যায়। এই ৮-৯ হাজার মেগাওয়াটের যে পার্থক্য, সেটা দুটি কারণে ঘটে। একটি কারণ সেচ, সেচের জন্য দুই হাজার মেগাওয়াট অতিরিক্ত লাগে। সেচ না হলে খাদ্য উৎপাদন হবে না। তাই সেচের ব্যাপারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
‘বাকি বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ে কুলিং লোডের কারণে। এখন সবখানেই এসি পৌঁছে গেছে। এসির লোড পাঁচ থেকে ছয় হাজার মেগাওয়াট। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এসিতে একটা থার্মোস্ট্যাট থাকে, সেটা যদি ২৫ বা তার ওপরে রাখা যায়, তাহলে দুই থেকে তিনি হাজার মেগাওয়াট সাশ্রয় হয়। ১৯, ২০ কিংবা ২১ এসি চালিয়ে ভারি একটা কোর্ট পরে থাকা, এটা আমরা অ্যাফোর্ড করতে পারবো না। ২৫ কিংবা ২৬ কিন্তু একটা কমফোর্টেবেল টেম্পারেচার। এসি ব্যবহারে কোনো বিধিনিষেধ নাই। তবে টেম্পারেচার ২৫/২৬ ডিগ্রিতে রাখতে হবে। ’
তিনি বলেন, আমরা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মসজিদের ইমামদের অনুরোধ জানাব যেন মসজিদগুলোতে এসি যেন ২৫ ডিগ্রির নিচে না নামানো হয়। সচিবালয়সহ অফিসগুলোতেও যেন ২৫ ডিগ্রি রাখা হয়, এটা সরকার অনুরোধ করবে। সবার সহযোগিতা পেলে রমজান এবং গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের চাহিদা ও সরবরাহে কোনো ঘাটতি হবে না।
উপদেষ্টা আরও বলেন, এটা নিয়মিত নজরদারি করবে আমাদের বিশেষ টিম। যদি দেখা যায় আমাদের অনুরোধ উপেক্ষিত হয়েছে, তাহলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব, এতে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে। লোডশেডিং হতে পারে। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের সমানভাবে লোডশেডিং দেওয়া হবে।