বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এটি থেকে রূপ নেওয়া সরকার পতনের ১ দফা দাবি- পেছন ফিরে তাকালে নির্মাতা মোস্তফা সরকার ফারুকীকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়। এখনও তিনি আওয়ামী আমল নিয়ে নানা সমালোচনা করে থাকেন।নিজের মতামত দেন।
গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন, অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ, সমসাময়িক সমালোচনা তার ফেসবুকে ঘাঁটলেই দেখা যাচ্ছে। আরও একবার সমালোচকের ভূমিকা নিয়েছেন মোস্তফা সরকার ফারুকী। আওয়ামী লীগকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করেছেন, মানুষকে বোঝাতে চেয়েছেন কেন এ দলটিকে আর দরকার নেই।
ফারুকীর এবারের সমালোচনাটি ভিন্ন আঙ্গিকে। কয়েকটি প্রশ্ন রেখে দলটিকে নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলের কিছু দিকও ব্যাখ্যা করেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে নিজের নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুকে ছবিয়ালের কর্ণধার লেখেন- ‘অনেকে আশা করেছিলেন আওয়ামী লীগের উপলব্ধি হবে। তারা অনুশোচনায় ভুগবে, বিচার পর্ব পার হয়ে নতুন রাজনীতি নিয়ে আসবে মানুষের সামনে। আর ওদিকে আওয়ামী লীগ আশা করছে, বাংলাদেশের মানুষের উপলব্ধি হবে যে, তাদের আমাদের কতটা দরকার। তারা কল্পনায় দেখতে পাচ্ছে, আমরা তাদের মিস করছি। কি বিস্ময়কর! আসুন আমরা একটু কল্পনা করার চেষ্টা করি তাদের আমাদের কেন দরকার?
এই জুলাই হাজারের বেশি তরুণ-কিশোর-ছাত্র-ছাত্রীকে খুন করেছে। আরও কয়েক হাজার খুন করার জন্য তাদের দরকার? সরকারের শীর্ষ নেতৃত্বের সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতায় নিজের ক্যাশিয়ার মারফত ব্যাংক লুট করে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করেছে, যেটাকে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডাকাতি বলা হচ্ছে। আরও দশটা ব্যাংক লুটের জন্য দরকার? মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা চুরির জন্য দরকার? কুইক রেন্টালের নামে কুইক ডাকাতির জন্য দরকার? অসম এবং অবিশ্বাস্য চুক্তির জন্য দরকার?
এই দফায় দলের সব নেতাকে সমান প্রশ্রয় দেওয়া যায় নাই। সামনের দিনে নিশ্চিত করা হবে জাভেদের মতো সবাই যেন বিদেশে কম-সে-কম ৩৬৫টা বাড়ি কিনতে পারে। কোনো বৈষম্য করা হবে না। এই জন্য দরকার? এক যুগের বেশি সময় ধরে শত শত মানুষ গুম করেছে। আরও কয়েক হাজার গুম করার জন্য দরকার? আরেকটা বিডিআর কার্নেজের জন্য দরকার? তার মানে কি এখন যা হচ্ছে সব ঠিক? অ্যাবসোলিউটলি নট।
এখন সবাই নিজেকে সরকার ভাবছে। তা জানিয়ে মোস্তফা সরকার ফারুকী বলেন, নির্বাচিত সরকার আসার আগ পর্যন্ত সবাই নিজেকেই সরকার ভেবে অনেক উল্টাপাল্টা কাজ করছে। কেউ কেউ অনলাইন-অফলাইনে বিভেদ উস্কে ঘোলা পানিতে মাছ ধরতে চাইছে। এই সরকারের ১০০০ বিষয়ে আমার নিজেরই সমালোচনা আছে। কিন্তু আমি বাস্তবতাটাও বুঝি।
১৬ বছরে সব সিস্টেম দলীয় লুটপাট আর ক্ষমতা টিকায়ে রাখার কাজে যখন ব্যবহৃত হয়, তখন যে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়, তাদের আসলে সালাম করা উচিত। আমি প্রফেসর ইউনুসকে সালাম জানাই আমাদের বর্জ্য পরিষ্কারের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার জন্য। ওয়াকার সাহেব এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের সালাম জানাই জনতার হয়ে এই কাজ করার জন্য। তারা আরামেই থাকতে পারতেন হাসিনার সুবিধা খেয়ে।