রাজশাহীতে সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনে ডাকাতির চেষ্টার বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ভোরে ৪টার দিকে রাজশাহীর পবা উপজেলার বায়া-তানোর সড়কের বাগসারা ও বাগধানী এলাকার মাঝামাঝি এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ঘটনার সময়ের একটি ভিডিও করা হয়েছে প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে। এতে দেখা যায়, গাড়িটি ঘটনাস্থলে গেলেই দেশীয় অস্ত্র হাতে দুজন টর্চের লাইট মারেন। গাড়ি থামাতেই তারা সামনে এসে দাঁড়ান। এরপর গাড়িটি যখন পেছনে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে তখনও ওই দুইজন দেশীয় অস্ত্র হাতে ধাওয়া করছেন।
নির্জন ওই এলাকায় ডাকাতদলের কবলে পড়া এক প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ডাকাতদলের কবলে পড়া আত্মীয়ের কাছ থেকে ফোন পেয়ে আরও এক ব্যক্তি পুলিশের জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে কল করার কথাও জানিয়েছেন। তবে ঘটনার বিষয়ে পবা থানা পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি।
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার নাকইল গ্রামের ব্যবসায়ী এনামুল হক জানান, তিনি একটি নতুন প্রাইভেটকার কিনে ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পেছনের আরেকটি মাইক্রোতে তার কয়েকজন নিকটাত্মীয় ছিলেন। তিনি প্রাইভেটকার নিয়ে ছিলেন সামনে। আর পেছনের মাইক্রোটি ছিল একটু দূরে। তারা তানোর উপজেলার সীমানার মধ্যে ঢোকার একটু আগে দেখেন সামনে কয়েকটি মাছবাহী মিনি ট্রাক, পিকআপ ও সিএনজি দাঁড়িয়ে। তিনি ভেবেছিলেন সামনে যানজট লেগেছে। তাই ডান পাশ দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িগুলোকে ওভারটেক করার চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েকজন ডাকাত দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার গাড়ি ঘিরে ধরে।
তারা গাড়ির গেট খোলার জন্য বলতে থাকে। কিন্তু এনামুল হক গেট না খুলে গাড়িকে পেছন দিকে নিতে থাকেন। এরই মধ্যে পেছনের প্রাইভেটকারটিও চলে আসে। একইভাবে এই প্রাইভেটকারের গেট খোলার জন্যও বলেন ডাকাতরা। তবে ওই গাড়িচালক তুহিন আলী গেট না খুলে গাড়ি পেছনে ঘোরাতে থাকেন। তখন ডাকাতরা গাড়িতে হাঁসুয়া ও রামদার আঘাত করেন।
এ সময় প্রাইভেটকারচালক তুহিনের গাড়ির গ্লাস ভেঙে দেওয়া হয়। গাড়ি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করায় এক ডাকাত তুহিনকে লক্ষ্য করে হাঁসুয়ার আঘাত করেন। এতে তুহিনের ব্লেজার কেটে যায়। তিনি একটুর জন্য রক্ষা পান। এভাবে তারা পালিয়ে আসেন।
ডাকাতের কবলে পড়ে এনামুলের নতুন প্রাইভেটকারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ব্যবসায়ী এনামুল হক আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তারা আবার বায়া মোড়ে চলে আসেন। এর প্রায় ২০ মিনিট পর ওই রাস্তা দিয়ে আরও গাড়ি যেতে শুরু করলে তারাও পেছনে পেছনে যান। গিয়ে দেখেন, ডাকাতেরা যেখানে আক্রমণ করেছিল সেখানে সড়কের ওপর থেকে একটি কাটা গাছ সরানো হচ্ছে। ওই সময় ঘটনাস্থলে কোন ডাকাতকে দেখা যায়নি। তার দাবি, প্রথমবার ঘটনাস্থলে তিনি ১৫ থেকে ২০ জন ডাকাত দেখেছেন। সবার হাতেই দেশীয় অস্ত্র ছিল।
এদিকে এনামুল হকের আত্মীয় বায়া এলাকার আবদুল গণি জাতীয় জরুরি সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলেন বলে দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, আমার আত্মীয়রা ডাকাতের কবলে পড়ে ফোন করেন। আমাকে তারা বলেন যে, তারা ডাকাতের কবলে পড়েছেন। এখানে হতাহতের ঘটনাও ঘটতে পারে। এ খবর শুনেই তিনি জরুরি সেবায় ফোন করেন।
পবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, এমন ঘটনার কথা তার জানা নেই। শুক্রবার সারারাত তারা ডিউটি করেছেন। তার সঙ্গে এই জোনের উপ-কমিশনারও (ডিসি) ছিলেন।
ঘটনা শুনলে তো সঙ্গে সঙ্গেই তারা যেতেন। আর সকাল হয়ে গেছে তবুও কেউ থানায় অভিযোগ তো দেয়নি। দিলে তারা বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।