পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলা ডলারের তেজ কমতে শুরু করেছে। আরও ২৫ পয়সা কমানো হয়েছে। আগামী রোববার (১৭ ডিসেম্বর) থেকে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে টাকা-ডলারের বিনিময় হার হবে ১১০ টাকা। অন্যদিকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ডলার ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে কিনবে ব্যাংকগুলো। আর আমদানি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ১১০ টাকা দরে বিক্রি করবে।
দুই বছর পর গত ২২ নভেম্বর বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলারের দর ৫০ পয়সা কমানো হয়। ২৯ নভেম্বর আরও ২৫ পয়সা কমানো হয়। দুই সপ্তাহ পর আরও ২৫ পয়সা কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)।
এ নিয়ে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার বিপরীতে ডলারের দাম ১ টাকা কমল।
আগামী সপ্তাহের প্রথম দিন রোববার থেকে টাকা-ডলারের এই বিনিময় হার কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাফেদার চেয়ারম্যান আফজাল করিম। তিনি বলেন, “বুধবার সন্ধ্যায় বাফেদা ও এবিবির বৈঠকে ডলারের দর আরও ২৫ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাজারের ডলারের সরবরাহ বাড়ছে। রেমিটেন্সের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়ছে। আরেকটি সুখবর হচ্ছে—আইএমএফের প্রায় ৭০ কোটি ডলার দু-একদিনের মধ্যে রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। এডিবি ৪০ কোটি ডলার ঋণসহ আরও কয়েকটি সংস্থার ঋণ কিছুদিনে মধ্যে রিজার্ভে যোগ হবে।
সব মিলিয়ে ডলারের দর আরও কমবে এবং টাকা শক্তিশালী হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলারের দর ঘোষণা করে আসছে বাফেদা ও এবিবি। প্রথমে রেমিট্যান্সে ১০৮ টাকা এবং রপ্তানিতে ৯৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে বাড়িয়ে উভয় ক্ষেত্রে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়। আর আমদানিতে নির্ধারণ করা হয় ১১১ টাকা। ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এই দর ছিল। সব ক্ষেত্রে তিন দফায় ডলারের দর মোট ১ টাকা (৫০ পয়সা, ২৫ পয়সা ও ২৫ পয়সা) কমানো হয়েছে।
প্রায় দুই বছর ধরে ডলারের বাজার অস্থির। দেড় বছর আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় ‘স্থির’ ছিল ডলারের দর। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার পর বাড়তে থাকে ডলারের দর; টানা বাড়তে বাড়তে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারেই ১১১ টাকায় উঠে যায়। সে হিসাবে দেখা যায়, গত দুই বছরে টাকার বিপরীতে ডলারের দর বেড়েছিল ৩০ শতাংশের বেশি।