ঐকমত্য কমিশনে বিএনপির নোট অব ডিসেন্টকে নোট অব চিটিং বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বিএনপিই প্রথম অনৈক্যের সৃষ্টি করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলা মোটরে অস্থায়ী কার্যালয়ে জাতীয় যুবশক্তির আয়োজনে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন এবং জাতীয় নির্বাচন কোন পথে? শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামন্তা শারমিন, ডা. তাসনিম জারা, ডা. খালেদ সাইফুল্লাহ প্রমুখ।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর প্রথম অনৈক্যের সৃষ্টি করেছে বিএনপি। ঐকমত্য কমিশনে দলটি নোট অব ডিসেন্ট নোট অব চিটিং।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি ঐকমত্য কমিশনে (এনসিসি) নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে ভাইয়াগিরি করার জন্য। নতুন বাংলাদেশে এমনটি করতে দেওয়া হবে না। ঐকমত্য কমিশনে বিএনপি কিছু করতে চাইলে তরুণরা প্রতিহত করবে।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, জুলাই সনদে আইনি ভিত্তির বিষয়ে একটি দল সংসদের কথা বলেছে। তারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট চায়। আরেকটা দল নভেম্বরে গণভোটের কথা বলছে। তবে আমরা গণভোট চাই। তবে নভেম্বরে হতে হবে এমনটি চাই না। শহীদ মিনারে গিয়ে ড. ইউনূসকেই আইনি ভিত্তি দিতে হবে। এ ব্যত্যয় হলে আমরা মানবো না।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি সুপারিশকৃত সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত অধ্যাদেশ জারি করতে হবে সরকারকে। এতে সই করার একমাত্র এখতিয়ার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের। এখানে চুপ্পুর কোনো ক্ষমতা নেই। কারণ সে একজন খুনি।
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, জাতীয় পার্টির বিষয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। জামায়াত বুঝাতে চায় তারা সংস্কারের পক্ষে। আসলে তারা বাস্তবে কিছু আসন বাগিয়ে নেওয়ার জন্য এ ধরনের কথা বলছে। আর বিএনপি সরাসরি বিপক্ষে। সে হিসেবে বিএনপি কিছুটা পরিষ্কার। তিনি মনে করেন বিএনপি ও জামায়াত মুখে বিরোধের কথা বললেও তারা আসন নিয়ে দরকষাকষি করছে। জামায়াত একাত্তরে ভুল করেছে, এখনও ভূত চেপেছে। সে ক্ষেত্রে এনসিপির সম্ভাবনা জায়গায় তৈরি হয়েছে।
নিম্নকক্ষে জামায়াতের পিআর দাবির সমালোচনা করে তিনি বলেন, জামায়াত মুখে জুলাই সনদের কথা বললেও তারা নিম্নকক্ষে পিআরের কথা বলে আসন নিয়ে দরকষাকষি করছে। এটা এক ধরনের ভণ্ডামি।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা বলেন, আমরা জুলাই সনদে সই করতে চাই। তবে তার আগে বাস্তবায়নের পথরেখা সুস্পষ্ট করতে হবে। সেটি নিয়ে আবারও আলোচনা করতে হয়। এটি দুঃখজনক।
সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় যুবশক্তির আহ্বায়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন জমিদারি আচরণ করছে। এটি অগ্রহণযোগ্য। শাপলাই হবে এনসিপির প্রতীক। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ দ্রুত জারি করতে হবে। জুলাই সনদের অবস্থানের কারণে প্রমাণিত হয় আগামীতে এনসিপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাবে।
সেমিনারের সঞ্চালনায় ছিলেন জাতীয় যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সোহেল।