বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের কাজ ৮০% শেষ, আশ্বাস পেয়ে ৭ কলেজের আন্দোলন স্থগিত

বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশের কাজ ৮০% শেষ, আশ্বাস পেয়ে ৭ কলেজের আন্দোলন স্থগিত

সাত সরকারি কলেজকে নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের অধ্যাদেশের কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস পেয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এই আশ্বাসের ভিত্তিতে সোমবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থীরা আজকের মতো তাদের অবস্থান কর্মসূচি স্থগিত করেছেন।

সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে সচিবালয় থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী তানজীমুল আবিদ। তিনি ২৩ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।

তানজীমুল আবিদ জানান, তারা শিক্ষা উপদেষ্টার ব্যক্তিগত সচিবের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাদের নিশ্চিত করা হয়েছে, অধ্যাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। তবে অধ্যাদেশের কাজ বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে, যা সবচেয়ে বেশি সময়সাপেক্ষ।

তিনি বলেন, এখন সব থেকে সময় সাপেক্ষ কাজ হচ্ছে ৬ হাজার ইমেইল যাচাই। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জমা হওয়া প্রায় ৬ হাজার ই-মেইল যাচাই করতে সময় লাগছে। শিক্ষার্থীদের উদ্বেগের কারণে এ কাজের জন্য লোকবল দুজন থেকে বাড়িয়ে ৫ জন করা হয়েছে। এর পরবর্তী ধাপ হচ্ছে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা। প্রায় ১২০০ শিক্ষক, দেড় লাখ শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা না করে সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছে না। এই আলোচনা শেষ করতে তিন-চার দিনের বেশি সময় লাগবে।

তানজীমুল আবিদ আরও বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে, এই ‘লং ডিউরেশন ফেজ’ বা দীর্ঘ ধাপটি শেষ হলেই অধ্যাদেশের ৮০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। পরবর্তী ধাপগুলো, যেমন কেবিনেটে উপস্থাপন এবং রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর, খুব কম সময়েই (২ থেকে ৪ দিনের মধ্যে) শেষ করা সম্ভব হবে।

এই শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জানান, চলমান আন্দোলনে তাদের শারীরিক ও মানসিক কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। তাদের দুজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। একজন শিক্ষার্থীকে শিক্ষকদের দ্বারা মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে এবং তার মাথা ফেটে গেছে। এছাড়া আন্দোলন চলাকালীন দুজন শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তানজীমুল আবিদ বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলেন, তারা কোনো রাজনৈতিক সরকার নন, বরং জনগণের জন্য কাজ করছেন। তিনি শিক্ষার্থীদের চাপ অব্যাহত রাখার কথা বললেও এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি না করার অনুরোধ করেন, যা কাজকে বিলম্বিত করতে পারে। তবে আশ্বাসের ভিত্তিতে আজকের মতো কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে জানাবো।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে (ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ) পৃথক করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়।

এর আগে সকালে, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে অন্যান্য কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দিলে সচিবালয় অভিমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি ঠেকাতে পুলিশ ব্যারিকেড ও জলকামান মোতায়েন করে।  

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS