পাঠ্যপুস্তক ব্যবস্থাপনার এখতিয়ার হস্তান্তর সমাধান নয়: টিআইবি

পাঠ্যপুস্তক ব্যবস্থাপনার এখতিয়ার হস্তান্তর সমাধান নয়: টিআইবি

প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, প্রকাশনা ও বিতরণের দায়িত্ব জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্তে সমাধান আসবে না বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

টিআইবির মতে, এটি যেন ‘মাথাব্যথার কারণে মাথা কেটে ফেলার মতো’ সিদ্ধান্ত।

সংস্থাটি বলছে, এনসিটিবির স্বায়ত্তশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে যে দীর্ঘদিনের সুশাসনের সংকট তৈরি হয়েছে, তার টেকসই সমাধানে এ ধরনের এড-হক সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে না।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদ্যমান আইন সংশোধন করে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুদ্রণ ও বিতরণের অন্তর্বর্তী উদ্যোগ এনসিটিবিকে কেবল দুর্বলই করবে, গুণগত কোনো পরিবর্তন আনবে না। বরং অনিয়ম-দুর্নীতি কেবল স্থানান্তরিত হবে।

তিনি আরও বলেন, মূল সমস্যা সমাধান না করে এনসিটিবির দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে প্রায় শূন্য থেকে এই গুরুদায়িত্ব অর্পণের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। এতে সংকট ও সমন্বয়হীনতা আরও বাড়বে।  

টিআইবি মনে করে, একদিকে এনসিটিবি, অন্যদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর—এই দুই প্রতিষ্ঠানের দ্বৈত দায়িত্বের মাধ্যমে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা কঠিন হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পাঠ্যবই ব্যবস্থাপনায় দুর্নীতিতে যারা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্নীতির প্রকৃত কারণ চিহ্নিত না করে বিকেন্দ্রীকরণ কার্যকর হবে না।  

সময়মতো বই সরবরাহে ব্যর্থতা, মান নিয়ে প্রশ্ন ও সমন্বয়হীনতার দায় এককভাবে এনসিটিবির ওপর আরোপ করলেও মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর দায় এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেছে টিআইবি।

সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বায়ত্তশাসনের পথে প্রতিবন্ধকতা এনসিটিবিকে অকার্যকর করে তুলেছে, বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, সরকারকে এনসিটিবিকে প্রয়োজনীয় স্বাধীন সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা দিতে হবে। পাঠ্যপুস্তক প্রণয়ন, দরপত্র প্রক্রিয়া, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণ—সব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটির পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।  

টিআইবি জানায়, এনসিটিবির বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় যে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS