নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধে অভিযানে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছেন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) মেঘনা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ঠেকাতে বিশেষ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।তবে এতে কেউ হতাহত হননি।
রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানার নেতৃত্বে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় সঙ্গে ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ম্যাজিস্ট্রেট মো. শফিকুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন এবং স্থানীয় সাংবাদিক, ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও থানা পুলিশ।
জানা যায়, রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ইউনিয়নের ধরাভাঙ্গা গ্রামের পাশের নদীতে কমপক্ষে ২০-৩০টি ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হয়। যা এক পরিবহন করা হয় প্রায় ৫০টি বাল্কহেডে করে। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে নরসিংদীর রায়পুরায় মেঘনা নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করে আসছে একটি মহল। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে একাধিকবার জেল জরিমানা করা হলেও কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না তাদের।
এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সেখানে অভিযানে যায় প্রশাসন। প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে বাল্কহেড ও ড্রেজার সরাতে থাকেন অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। একপর্যায়ে সেখান থেকে ছয়টি ড্রেজার জব্দ করে প্রশাসন। এসময় দুজনকে আটক করে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদ রানা। জরিমানার টাকা দিতে না পারলে তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বালু উত্তোলনের স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে রায়পুরা উপজেলার চরমধুয়া ইউনিয়নের একটি ইটভাটায় আরও কিছু বালু বোঝাই বাল্কহেড ও ড্রেজার রেখে বালু ব্যবসায়ীরা পালাতে থাকেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিমটি সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে দুটি স্পিডবোটে করে ভাটার দিকে রওনা হয়। এসময় তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ব্যবসায়ীরা। পরে দ্রুত স্পিডবোট ঘুরিয়ে ফিরে আসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত বা কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী জেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রশাসনের অনুমতিতে মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করেন ইজারাদারেরা। তবে তাদের সীমানা পেরিয়ে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর ও চরমধুয়া ইউনিয়নের সীমানায় তারা ড্রেজার বসিয়ে মাটি কাটেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে প্রশাসন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, কারা গুলি ছুড়েছে, সে ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করেছি। জড়িতদের ব্যাপারে নিয়মিত মামলা করা হচ্ছে।
আমরা যদি মেঘনা নদীসহ ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি রক্ষা করতে চাই, তাহলে এখানে পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স যেমন কোস্টগার্ড, নৌপুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতা লাগবে। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানাব, যোগ করেন তিনি।