হোটেলেই জুমার নামাজ আদায় করল বাংলাদেশ দল

হোটেলেই জুমার নামাজ আদায় করল বাংলাদেশ দল

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ঘিরে গোয়ালিয়রে বেশকিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তার বলয়ে রয়েছেন দুই দলের ক্রিকেটাররা।মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৫ শ পুলিশ। এমনকি খেলোয়াড়দের বাইরে যেতেও বারণ করা হয়েছে।  

এসব কারণে গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ আদায় করতে গোয়ালিয়র শহরের বিখ্যাত মতি মসজিদে যেতে পারেননি শান্তরা। টিম হোটেলেই নামাজ আদায় করেছেন তারা। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ সদস্যের বরাতে এমনটাই জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা ‘পিটিআই’।

গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার বিদায়ের পর বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতনের অভিযোগ এনে প্রথম টি-টোয়েন্টি বাতিলের হুমকি দিয়েছিল হিন্দু মহাসভা। তারা ধর্মঘটেরও ডাক দিয়েছিল। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছে সেখানকার প্রশাসন। যে কারণে খেলোয়াড়রা কার্যত ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন। হোটেল থেকে বের হতেও বারণ করা হয়েছে তাদের। ফলে মসজিদে যেতে পারেননি বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা।

গোয়ালিয়রের যে হোটেলে বাংলাদেশ দল আছে, সেখান থেকে মতি মসজিদের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। কিন্তু বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন গোয়ালিয়র জোনের পুলিশ মহাপরিদর্শক অরবিন্দ সাক্সেনা। ‘পিটিআই’-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘মতি মসজিদকে ঘিরে আমরা নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিস্তৃত করেছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশ দল আসেনি। কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের পক্ষ থেকে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। (মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে) কেউ বাধাও দিতে বলেনি। ‘

তবে শহরের একজন শীর্ষ ইসলামি ব্যক্তিত্ব শাহার কাজী বাংলাদেশ দলের হোটেলে যান এবং স্থানীয় সময় দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নামাজে ইমামতি করেন। যদিও বাংলাদেশ দল জুমার নামাজ আদায় করতে যাবেন, এমন সম্ভাবনা থাকায় মসজিদের আশেপাশে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল পুলিশ। উপস্থিত হয়েছিলেন কয়েকজন সাংবাদিকও। এ নিয়ে সাক্সেনা বলেন, ‘তাদের (বাংলাদেশ দলের) তিন কিলোমিটার ভ্রমণ করে মসজিদে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে আমাদের দিক থেকে কোনো সমস্যা ছিল না। ‘

এর আগে নিউজিল্যান্ড সফরে মসজিদে হামলার ঘটনায় অল্পের জন্য বেঁচে যান তামিম-মুশফিকরা।  ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ, শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে জুমার নামাজ চলাকালে আল নূর মসজিদ এবং লিনউড ইসলামিক সেন্টারে ব্রেন্টন টারান্ট নামের এক সন্ত্রাসী গুলিবর্ষণ করলে ৫১ জন নিহত হন। ওই মসজিদে বাংলাদেশ দলের সদস্যরা জুমার নামাজ পড়তে যাচ্ছিলেন। মসজিদে প্রবেশের ঠিক আগে স্থানীয় একজন তাদের মসজিদে ঢুকতে নিষেধ করেন। দৌড়ে সেখান থেকে হ্যাগলি ওভালে ফেরত আসেন তারা, যেখানে অনুশীলন চলছিল তাদের।

এদিকে গোয়ালিয়রে আগামী সোমবার পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল নিষিদ্ধ করেছে সেখানকার প্রশাসন। শহরে প্রায় ২ হাজার ৫০০’র বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যে দুটি হোটেলে খেলোয়াড়রা রয়েছেন সেগুলোকে ঢেকে ফেলা হয়েছে নিরাপত্তার চাদরে। এ নিয়ে অরবিন্দ সাক্সেনা বলেন, ‘ম্যাচের দিন পুলিশ সদস্যরা বেলা ২টা থেকে রাস্তায় অবস্থান করবে। ম্যাচ শেষ হওয়ার পর দর্শকরা বাড়ি ফিরে যাওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবে। নিষেধাজ্ঞা জারির পর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চোখ রাখছি। ’

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023 EU BANGLA NEWS