ভূমিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেছেন, জলমহাল ব্যবস্থাপনায় কেবল রাজস্ব আদায় নয় বরং স্থানীয় মৎস্যজীবীদের কল্যাণ ও জীবিকার উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি জলমহাল ইজারা দান সংক্রান্ত কমিটির ৭৬তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমানসহ ভূমি মন্ত্রণালয়, সমবায় অধিদপ্তর ও মৎস্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ইজারার জন্য প্রস্তাবকৃত জলমহাল সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা প্রশাসকরা সভায় ভার্চু্যয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, আমাদের অবশ্যই আইনের মধ্যেই কাজ করতে হবে, তবে একইসঙ্গে স্থানীয় জেলেদের কল্যাণ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় অর্থনৈতিক বিবেচনা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন ভূমিমন্ত্রী।
মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীলদের জীবনযাত্রার জন্য তাদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি টেকসই মৎস্য আহরণের ব্যাপারে তাদের উৎসাহিত করার তাগিদ দেন মন্ত্রী।
ভূমি সচিব মো. খলিলুর রহমান জানান, একবার অনলাইনে আবেদন করে কোনো কারণে ইজারা না পেলে পরের বার আবেদনের সময় পুনরায় অনলাইনে আবেদন করা বাধ্যতামূলক নয়। এক্ষেত্রে, আবেদনকারীর সুবিধা বিবেচনা করে আবেদনের সময় ম্যানুয়াল আবেদন গ্রহণ করা হবে।
সভায় জয়পুরহাট, নেত্রকোণা, যশোর, কুড়িগ্রাম, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, শেরপুর ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন ও সুপারিশের ভিত্তিতে ১২১টি জলমহাল ইজারার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিল, হাওর, নিম্ন জলাভূমি ও নদ-নদীতে মৎস্য আহরণের এলাকাকে জলমহাল বলা হয়। এক হিসাবমতে ছোট-বড় মিলিয়ে দেশের জলমহালের সংখ্যা প্রায় ৩৮ হাজার। এসব ইজারা দিয়ে বছরে প্রায় শতকোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। বেশ কয়েকটি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী ও দর্শনীয় স্থান হিসেবে ইজারা-বিহীন রাখা হয়েছে যেমন, দিনাজপুরের রামসাগর, সিরাজগঞ্জের হুরাসাগর। মাছ সংগ্রহের অভয়াশ্রম ঘোষিত জলমহালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সুনামগঞ্জের টাংগুয়ার হাওড় ও মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওড়। জলমহাল দেশের মানুষের প্রাণিজ আমিষ পূরণের অন্যতম উৎস।